ব্রেকিং নিউজ

img/news-single-img/post-img-01.jpg

একুশ শতাব্দীর ভারতবর্ষে এখনও যে যে বিষয় গুলিকে অধিকাংশ  মানুষ  ব্রাত্য করে  রেখেছেন   তার মধ্যে  অন্যতম  হল সেক্স এডুকেশন । এই বিষয়টি আমাদের দেশে ঠিক যতটা স্পর্শকাতর ঠিক ততটাই বিতর্কিত এবং এই কারনেই আমরা আজও সুগঠিত সমাজব্যবস্থা  স্থাপনের পথে অনেকটাই পিছিয়ে  আছি।  ভারতবর্ষের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাই তার প্রমান । সেক্স  এডুকেশনের  অপরিসীম গুরুত্ব বুঝতে হলে আগে জানতে হবে এর অর্থ, আসুন সেদিকে একটু আলোকপাত করা যাক।  

 

সেক্স এডুকেশন কি 

এটি একটি অত্যন্ত উচ্চ গুনমান সম্পন্ন শিক্ষা পদ্ধতি যার সাহায্যে একজন মানুষ খুব সহজেই যৌনতা ,লিঙ্গ ও এই সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য জানতে ও বুঝতে পারেন । এই শিক্ষার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্থাপন  ও নিজের যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ  ধারনা পেতে পারেন । বর্তমানে ,স্কুল থেকেই এই শিক্ষার সূচনা করার সিদ্ধান্ত  সরকার থেকে নেওয়া হয়েছে ,এতে ছোটো  থেকেই ছেলে মেয়েদের মধ্যে যৌনতা নিয়ে কোনোরকম অশিক্ষা ও  কুসংস্কার স্থান নিতে পারে  না । সেক্স এডুকেশনের অন্যতম উল্ল্যেখ যোগ্য  উপকারিতা হল যৌন রোগের সম্ভাবনা অনেকাংশে কমায় ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন কতটা জরুরি সেটা মানুষকে বুঝতে সাহায্য করে । 

২০০২ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত  ইউনিসেফ ও পপুলেশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার যৌথ উদ্যোগে একটি সার্ভে করা হয় যেখানে দেখা যায় ভারতবর্ষের মোট জনসংখ্যার  প্রায় ২৫ কোটিই হল ১০ থেকে ১৯ বছরের শিশু ও কিশোর কিশোরী এবং আরও গভীরে গেলে দেখা যায় যে তাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু শ্রম,যৌন হয়রানি ও অপুষ্টির শিকার । সুতারাং, আমাদের দেশে দারিদ্রতা ও সাধারন শিক্ষার সাথে সাথে  সেক্স এডুকেশনের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য  হয়ে উঠেছে।  এবার আমরা একটু বিস্তারিত ভাবে সেক্স এডুকেশনের  প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করব । 

সেক্স এডুকেশনের সাতটি গুরুত্তপূর্ণ দিক 

১) ভারতীয় নারীদের শারীরিক সুস্থতা ও স্বাস্থ্যবিধির উন্নতির জন্য সেক্স এডুকেশনের  প্রয়োজনীয়তা  অকল্পনিয়,  ভারতে প্রতি বছর  ১৫ থেকে ২৪ বছরের মেয়েদের মৃত্যুর হার সব থেকে বেশি অপরিকল্পিত মাতৃত্ব ও গর্ভপাতের কারনে ।এই অবস্থার পরিবর্তন একমাত্র সঠিক শিক্ষার  দ্বারাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব । 

২) শিশু ও নারী দের শারীরিক নির্যাতনের সংখ্যা নেহাত কম নয় ভারতে ,৫০% ছেলে মেয়েরা তাদের  শৈশবেই  যৌন  হয়রানির  শিকার  হয় এবং সঠিক শিক্ষার অভাবের জন্য তারা সারাজীবনের মত এই ক্ষত বয়ে বেড়ায়। 

৩) এইচ আই ভি এর সংক্রমণ  রোধ করার জন্যও সেক্স এডুকেশনের  প্রয়োজন ,উপযুক্ত শিক্ষার  অভাব  থাকার কারনেই সমগ্র  জনসংখ্যার  প্রায় ৩১% এই রোগে আক্রান্ত । 

৪) যৌন সম্পর্ক স্থাপনের সঠিক সময় সম্পর্কে ধারনা তৈরি হয় ।

৫) জন্মনিয়ন্ত্রন একটা বিরাট সমস্যা আমাদের দেশে ,একটি পারিবারে কতগুলি সন্তান হওয়া উচিৎ এবং সন্তানের  জন্ম  কিভাবে  নিয়ন্ত্রন  করা যায় সেই ব্যাপারেও সচেতনতা আসে ।

৬) সেক্স এডুকেশন কিশোরকিশোরী দের মধ্যে থেকে যৌনতা সম্পর্কে  নানা কুসংস্কার  দূর করে ।

৭) লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতেও সেক্স এডুকেশনের  অবদান আছে ,নারী পুরুষ উভয়ের সমান অবস্থান নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অনস্বীকার্য । 

 

ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় সেক্স এডুকেশনের  প্রবর্তন যেহেতু খুব বেশি সময় পার করেনি তাই এর সুফল পেতে আমদের অনেক বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে কিন্তু তার জন্য এই শিক্ষার গুরুত্ব কিছু কম হয়ে  যায় না  তাই আমাদের সকলের উচিৎ একটি উন্নত সমাজ ও দেশ গঠনের কাজে নিজেদের অংশগ্রহন করা ও সেক্স এডুকেশনের প্রচারে উদ্যোগ নেওয়া । 

 

তথ্য সূত্র : ইউনিসেফ ইন্ডিয়া (https://www.unicef.org/india/)

              পপুলেশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (https://popcouncilinstitute.org/)

You Might Also Like

Our Newsletter

স্কিল নিউজ